গত ১৫ই মে ২০২২ তারিখে কলকাতা মির্জা গালিব স্ট্রিট এ ডলার আর টাকার রেট ছিল নিম্নরূপ।
১। ১০০ টাকা = ৮২.৩₹
২। ১ ডলার (৯৩.৭৳) = ৭৮₹
৩। ১০০ বিকাশ = ৮৩.৩₹ + কাশ আউট চার্জ + ২০০₹ সার্ভিস ফি (যেকোন এমাউন্ট এর জন্য)
ডলার আমাদের সামনের দিনে কিনতে ৯৬-১০০ টাকাও লাগতে পারে টাই রেট চেক করে নিবেন। ব্যাংক গুলা নাকি LC করতে ৯৪-৯৮৳ নিচ্ছে (১৬ই মে ২০২২)। আর বিকাশে টাকা না নিয়ে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড endrose করে কেনাকাটা করতে পারেন। রেট কাছাকাছিই হবে।
আপডেট (২০২৩):
বর্তমানে ১০০ টাকার বিপরীতে ৭৩-৭৫ রুপি, ১ ডলারের (১১২-১১৩ টাকা) ৮৩-৮৫ রুপি পাওয়া যাচ্ছে। ৫০ ডলার বা তার চেয়ে ছোট নোট হলে রেট আরও ১-৩ রুপি কম পাবেন। ডলার আর টাকার হিসাব করলে ১০০ টাকার বিপরীতে কাছাকাছি রুপি পাওয়া যাচ্ছে। তাই বিশেষ কোন লাভ দেখতেছি না।
বাই রোডে আপনি সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা আনতে পারবেন। ডলার ৫,০০০ সেটা এয়ার আর রোডের জন্য সমানই। বেশি আনলে সমস্যা ফেস করতে পারেন। তবে মানি এক্সচেঞ্জার থেকে endrose করলে উল্লেখিত বা বেশি ডলার আনতে হবে, না হলে ইমিগ্রেশনে ঝামেলা করতে পারে।
আমার SCB, BRAC ও AB ছিল। Zaber Mahbub ভাই পরামর্শ দিয়েছিলেন ব্র্যাক ইউজ করতে আর অবশ্যই রুপিতে POS transaction করতে, ভুলেও USD তে পেমেন্ট না করতে। যদিও আমি পরে Wise কার্ড ইউজ করেছিলাম, আর রেট ভালই ছিল। প্রতি ডলারের রেট পড়েছিল প্রায় ৭৭.৪৫₹। বা ডলার টু রুপি কনভার্ট করে নিতে পারেন, তাতে ওয়াইজ ০.৫-০.৬% চার্জ করবে আর আপনি রুপিতে wise কার্ড থেকে পে করতে পারবেন। তাতে ১-২% সেভ হতে পারে।
আমি ২০২২ সালেই মোট ৩ বার ভারত ভ্রমণ করি। পরের ২ বারে MTB কার্ড বেশি ইউজ করেছিলাম। ওরা কার্ডের পেমেন্ট করার দিনে ডলারের রেট অনুযায়ী চার্জ করে। যা খুবই বাজে লেগেছে আমার কাছে। প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ৭৪-৭৬ রুপি রেট পেয়েছিলাম ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। ওদের কিছু POS মেশিনে টাকাতে বিল করে। পেলে সাথে সাথে বলবেন রুপিতে বিল করতে। Zaber ভাইয়ের দারুণ একটা লেখা ছিল এইটা নিয়ে, পেলে অ্যাড করে দিব।
চেষ্টা করবেন ফুটপাত এড়িয়ে কেনাকাটা করতে, ওরা যদি বুঝে আপনি বাংলাদেশী তাহলে আপনাকে পকেট কেটে রেখে দিতে ট্রাই করবে। আমি প্রথম দিন Big Baazar গিয়ে পুরো ফাঁকা দেখে হতাশ হয়ে ফিরেছিলাম। পরে ১৭ই মে CitiMart (এখন রিব্রান্ডিং হয়েছে নতুন নামে) & Bazaar Kalkata (আমার প্রথম পছন্দ) থেকে কেনাকাটা করেছিলাম Wise, MTB & BRAC – এর কার্ড দিয়ে করে।
১। জামাকাপড় – Bazaar Kolkata, Citi Mart, Boubazar
২। জুতা, ব্যাগ, লাগেজ – Sreeleather
৩। ঘড়ি বা স্মার্ট ওয়াচ – Time Square
৪। খাবার – Dhaka Hotel (দেশি খাবার), Kathleen (বেকারি আইটেম), BBQ Nation (বুফে), Zakaria St
৫। ঘি/মধু – Simpark Mall ভিতরে ঢুকে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দিবে। প্রতি কেজি ঘি মাত্র ৪০০-৬০০ রুপিতে পাওয়া যায়, ঘ্রাণে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য।
৬। গ্রোসারি – More Supermarket, blinkit (app)
সেটা পারবেন না, তবে মানুষকে জিজ্ঞেস করে মেইন রোড থেকে টেক্সী নিয়ে ৩০০-৪৫০ রুপিতে অনায়াসে ওল্ড টাউন বা মির্জা গালিব স্ট্রিট বা আশেপাশে চলে আসতে পারবেন। এয়ারপোর্ট থেকে টেক্সী নিয়েছেন তো মরেছেন। ১০০০-১৫০০ রুপি মেরে দিবে ১১-১৪ কিলোর জন্য। সরকারি ফিক্সড রেট, এই সেই গল্পঃ শুনিয়ে আপনাকে গলা কেটে ফিদা করে দিবে। ????
আমার নিজের অভিজ্ঞতায় Uber সব সময় বেশি চার্জ করে, যদিও ওদের গাড়ি অনেক দ্রুত পাওয়া যায়। বাইক নিলে আমার পছন্দ Ola আর Rapido, এর মধ্যে কোনটা যেন অটো ডিসকাউন্ট কুপন এপলাই করে। আর এই সেই অনেক ছাড় দেয় সব সময়। আপনি ১-২ বার ব্যবহার করলেই বুঝে যাবেন।
আমি blinkit অ্যাপস থেকে ভাল ডিল পেয়েছিলাম। বেশিরভাগ পণ্যে ১-২১% পর্যন্ত ছাড়, যা সুপার শপে পাইনি। আবার কুপন আর ফ্রি ডেলিভারি তো ছিলই। আমার প্রথম অর্ডারের ৩,১১৪ রুপিতে কুপন সহ (৭৫₹) মোট সেভ হয়েছিল ৪১৩₹ যা প্রায় ১২.৫৬%। ওদের রিফান্ড প্রসেস নিয়ে তারিফ করতেই হয়। আমার ২ টা চকলেট থেকে ২ পিস করে মিসিং ছিল, ওরা একটা নিউ অর্ডার করে ডেলিভারি দিয়েছিল ফ্রীতে, আরেকটার জন্য ওরা ওয়ালেটে রিফান্ড দিয়েছে যেহেতু স্টক ছিল না।
আর ওদের ডেলিভারি টাইম ১০-১৫ মিনিটে, অ্যাপ থেকে যত মিনিটে দেখবে ঠিক তত মিনিট বা তার আগে ডেলিভারি দিবে। এত দারুণ ওদের সার্ভিস যা আমরা দেশে কল্পনাও করতে পারি না। 🙂
আমরা ইসলামিয়া হোটেল থেকে প্রথম কয়েকদিন খেয়েছি (মির্জা গালিব স্ট্রিট মসজিদের নিচে)। কিছুদিন পর ঢাকা হোটেল এর সন্ধান পাই। ওদের মালিক হচ্ছে ঢাকা বনশ্রীর। সকালে ৬০ রুপিতে ভুনা খিচুড়ি পাওয়া যায়, যে পরিমাণ গরুর মাংস থাকে, তা খেতে খেতে মনে হবে দেশে আপনি ২০০ টাকায় ও পাবেন না। তবে ইসলামিয়ার গরুর কালা ভুনা মিস করবেন না, প্রতি প্লেট ৬০₹ আর হাফ ৩০₹। কবে কলিজা না নেয়াই ভাল, কারণ আমরা শুকনা করে কলিজা খেয়ে অব্যস্থ, কিন্তু ওরা ঝোল দিয়ে রান্না করে। আর ওদের ভাত আমাদের দেশের মতো না।
পিউর দেশের খাবারের টেস্ট পেতে ঢাকা হোটেল আমার একমাত্র পছন্দ।
সব চেয়ে কম খরচে মনে হয় গেদে দিয়ে যাওয়া যায়। যদিও আমার অভিজ্ঞতা নেই। অনেকেই এখন ঢাকা – কলকাতা ডিরেক্ট বাস সার্ভিস দিচ্ছে ১,৬০০-২,০০০ টাকায়। ওদের জন্য আলাদা লাইন থাকে বর্ডার ইমিগ্রেশনে, তাই ৩০-৪০ মিনিটেই ইমিগ্রেশন শেষ করা যায়।
আমি প্রথমবার বিমান আর পরের দুইবারই রেলে ভ্রমণ করেছি। যেতে ট্রাভেল ট্যাক্স সহ ২,৭০০-২,৮০০ টাকা লাগে, বাচ্চাদের ট্রাভেল ট্যাক্স লাগে না। ঢাকার ক্যান্টরমেন্ট (হোটেল রেডিসনের পাশেই) থেকে সকাল ৮ টার দিকে ছেড়ে যায়। আর কলকাতা থেকে ১,৬০০-১,৭০০ রুপিতেই রিটার্ন টিকিট পেয়ে যাবেন। ভোর ৭:৩০ মিনিটের দিকে ছেড়ে দেয় তাই ফজরের সময় এসে ইমিগ্রেশনের লাইন ধরা লাগে।
ফ্রিল্যান্সারদের ভিসা করতে কী কী ডকুমেন্টস লাগে জানতে এই লেখা পড়তে পারেন।
Leave a Reply